খাদ্যে ভেজাল : ১১ মাসে জরিমানা ৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা

Untitled-5 copyনিউজ ডেস্ক : খাদ্যে ভেজাল, ওজনে কম দেওয়া ও নিম্নমানের পণ্য বাজারজাতকরণের দায়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের গত ১১ মাসে চার কোটি ৭৩ লাখ ৫২ হাজার ১০০ টাকা জারিমানা করা হয়েছে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আজ বুধবার দুপুরে রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআই গৃহীত বিশেষ কার্যক্রম সম্পর্কে এক সংবাদ সম্মেলনে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এ তথ্য জানান।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের (২০১৫-১৬) জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসে ভেজালবিরোধী অভিযানে মোবাইল কোর্ট বা সার্ভিলেন্স টিমের মাধ্যমে ১১ মাসে চার কোটি ৭৩ লাখ ৫২ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া ভেজাল পণ্য উৎপাদনকারী, বিক্রেতার বিরুদ্ধে বিএসটিআই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এ সময়ে ৩৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৩৯টি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।’

‘গত ১১ মাসে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সংখ্যা ৭৯৬টি, মোবাইল কোর্টে মামলা দায়ের ১১৬৪টি, মোবাইল কোর্টে মামলা নিষ্পত্তির সংখ্যা ১১৬৪টি, সার্ভিলেন্স টিম পরিচালনার সংখ্যা ৬৫৮টি, সার্ভিলেন্স টিমে মামলা দায়েরের সংখ্যা ৬৬৫টি, মোবাইল কোর্টের জরিমানা আদায় চার কোটি ৭৩ লাখ ৫২ হাজার ১০০ টাকা।’

মন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবছর রমজান মাসে ভোক্তা পর্যায়ে ভেজালমুক্ত খাদ্য-পানীয় ও পণ্যসামগ্রী সরবরাহে বিএসটিআই ভেজালবিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এবারও বিএসটিআই কার্যক্রম শুরু করেছে, যা সারা মাস চলবে। অভিযানে মুড়ি, খেজুর, কলা, আম, সফ্ট ড্রিংক পাউডার, ফ্রুট জুস, ফ্রুট ড্রিংকস, ভোজ্য তেল, সরিষার তেল, ঘি, নুডলস, লাচ্ছা সেমাই, সেমাই, পানি, ডেক্সট্রোজ মনোহাইড্রেট ইত্যাদির ওপর বিশেষভাবে নজর রাখা হচ্ছে।’

আমির হোসেন আমু বলেন, ‘রমজানে নির্ভেজাল খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৮৩টি পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে বিএসটিআই ল্যাবে পরীক্ষণের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু নমুনার ল্যাবরেটরি টেস্টিং সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে যেসব প্রতিষ্ঠানের নমুনা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’

‘জেলা প্রশাসন, র‍্যাব, ডিএমপি ও এপিবিএনের উদ্যোগে পরিচালিত মোবাইল কোর্টে নিয়মিতভাবে বিএসটিআইর প্রসিকিউটিং অফিসারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। এর ফলে এ অভিযানের স্বচ্ছতা সম্পর্কে কোনো ধরনের প্রশ্নের অবকাশ থাকবে না।’

‘উচ্চপর্যায়ের সার্ভিলেন্স টিমের মাধ্যমে লাইসেন্সপ্রাপ্ত পানি কারখানার স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ, পরীক্ষণ ও মাননিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা মনিটরিং করা হচ্ছে। যেসব পানির কারখানা অবৈধভাবে ড্রিংকিং ওয়াটারের নামে পানি বাজারজাত করছে, তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পবিত্র রমজানেও এটি অব্যাহত থাকবে।’

‘১৮৩টি ফলে নমুনা সংগ্রহ করে তা বিএসটিআইতে পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে কোনোটিতেই ফরমালিনের অস্থিত্ব পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে ১১ আইটেমের খেজুর, ২৪ আইটেমের আম, চার আইটেমের লিচু, আট আইটেমের মাল্টা, ১৯ আইটেমের আপেল, পাঁচ আইটেমের আগুরসহ মোট ৬৮টি আইটেমের নমুনা নেওয়া হয়েছে। এর কোনোটির মধ্যেই ফরমালিনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ৩৬টি আইটেমের ফলের সার্ভিলেন্সের মাধ্যমে স্পটে পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যেও কোনো ফরমালিনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।’

সংবাদ সম্মেলনে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, বিএসটিআইর মহাপরিচালক মো. ইকরামুল হকসহ শিল্প মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

0 Comments

There are no comments yet

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − 13 =

Back to top