কীটনাশকে ভেজাল দিলে জেল, জরিমানা ও কারাদণ্ড

 কীটনাশকে ভেজাল দিয়ে কৃষককে প্রতারণা করলে এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছরের কারাদে র বিধান রেখে বালাইনাশক আইনের খসড়ার  অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তাঁর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম। তিনি জানান, বালাইনাশক কার্যক্রম ১৯৭১ সালের একটি অধ্যাদেশ অনুযায়ী পরিচালিত হয়ে আসছে। এবার এই অধ্যাদেশটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ আইনে রূপ দেয়া হচ্ছে। শফিউল আলম আরো জানান, যদি কীটনাশকে ভেজাল দেয়া হয়, বিজ্ঞাপন ও মোড়কে দেয়া তথ্যের সঙ্গে উপাদানের মিল না থাকে এবং কৃষককে প্রতারিত করা হয়, তাহলে কীটনাশক আমদানিকারক ও সরবরাহকারীদের এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছরের কারাদ  দেয়া হবে। দ্বিতীয়বার কেউ একই অপরাধ করলে দুই লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে দুই বছরের কারাদে র বিধান রয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরো জানান, ওই আইন কার্যকর রাখতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার এখতিয়ার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার গত বছরের একই সময়ের চেয়ে নয় দশমিক ৪৬ শতাংশ পয়েন্ট বেড়েছে। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ২০১৭ সালের তৃতীয় ত্রৈমাসিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয়টি মন্ত্রিসভা বৈঠকে ৮০টি সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে ৫৯টির, ২১টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৭৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে মন্ত্রিসভার আটটি বৈঠক হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ওই সময়ে সিদ্ধান্ত হয় ৫৬টি, যার মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে ৩৬টি। আর ২০টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন। বাস্তবায়নের হার ছিল ৬৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। শফিউল জানান, গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মন্ত্রিসভা বৈঠকে সাতটি চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) অনুমোদিত হয়েছে। আর সংসদে পাস হয়েছে ছয়টি আইন। আর ২০১৬ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মন্ত্রিসভা বৈঠকে চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) অনুমোদিত হয়েছিল চারটি। ওই সময়ে সংসদে ১০টি আইন পাস হয়।
এদিকে, প্রতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস’ হিসেবে পালনের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ৫ ফেব্রুয়ারি তারিখকে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস ঘোষণা এবং দিসবটি পালনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এ সংক্রান্ত পরিপত্রের ‘খ’ ক্রমিকে অন্তর্ভুক্তের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২২ মার্চ প্রস্তাব ছিল। কিন্তু ৫ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। কারণ হল ১৯৫৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গ্রন্থাগারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এজন্য ৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস হিসেবে মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে। শফিউল বলেন, এটার আরও একটা কারণ হল ফেব্রুয়ারি মাসটা হল বই নিয়ে আমাদের বেশ মাতামাতি হয়। একুশে মেলা, একুশে ফেব্রুয়ারি এগুলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখেৃ যেহেতু ৫ ফেব্রুয়ারি এই প্রতিষ্ঠানের ভিত্তিপ্রস্তর হয় সেজন্য এটাকে ওই দিনে পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়াও বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের স্ত্রীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়।

0 Comments

There are no comments yet

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − 5 =

Back to top